২৮শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে, দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এমন একটি ম্যাচের সাক্ষী হয়েছিল যা ক্রিকেট ভক্তরা বছরের পর বছর ধরে মনে রাখবে—ভারত বনাম পাকিস্তান ফাইনাল।
এশিয়া কাপের ইতিহাসে এই প্রথমবার ফাইনালে মুখোমুখি হয় ভারত ও পাকিস্তান।
অন-দ্য-পিচ গল্প: মুহূর্তের পর মুহূর্তে পাকিস্তানের উত্থান-পতন
পাকিস্তান ব্যাটিং শুরুটা ভালো করেছিল—সাহিবজাদা ফারহান (৫৭ রান) এবং ফখর জামান (৪৬ রান) প্রথম উইকেট জুটিতে অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু এরপর সবকিছু উল্টে যায়—১/১-এর ১১৩ রান থেকে দলটি ১৪৬ রানে অলআউট হয়, ৯ উইকেট হারিয়ে যায়। কুলদীপ যাদব দুর্দান্ত বোলিং করে ভারতকে বিপদ থেকে বেরিয়ে আনেন। জসপ্রীত বুমরাহ, অক্ষর প্যাটেল এবং বরুণ চক্রবর্তীও গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নিয়ে দলকে সমর্থন করেন।
ভারতের চ্যালেঞ্জ এবং জয়
ভারত ১৪৭ রানের লক্ষ্য নির্ধারণ করে। শুরুতে পরিস্থিতি ভালো ছিল না—অভিষেক শর্মা এবং অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবকে তাড়াতাড়ি আউট করা হয়েছিল। দল ২০/৩-এ নেমে গিয়েছিল। কিন্তু তিলক ভার্মা হাল না ছাড়ার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন। তিনি ৫৩ বলে অপরাজিত ৬৯ রান করে দলকে জয়ের দিকে নিয়ে যান। সঞ্জু স্যামসন (২৪ রান) এবং শিবম দুবে (৩৩ রান) এই জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। জয় সহজ ছিল না—শেষ ওভারে ১০ রানের প্রয়োজন ছিল এবং দ্বিতীয় বলে একটি ছক্কা জয় নিশ্চিত করে।
শুধু জয় নয়—বরং একটি বিতর্ক
চূড়ান্ত ম্যাচটি এক অনন্য মোড় নেয়—ভারত পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ট্রফি গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়। ভারত এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের সভাপতি এবং পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান মহসিন নকভির পুরস্কার প্রদানের উদ্যোগ প্রত্যাখ্যান করে। এই সিদ্ধান্ত সমাপনী অনুষ্ঠানটি অসম্পূর্ণ রেখেছিল এবং এটিকে রাজনীতি এবং জাতীয় অনুভূতির সাথে যুক্ত বলে দেখা হয়েছিল। পাকিস্তান দল ম্যাচের আগে এবং পরে হাত মেলানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্তু ভারত তেমন কোনও অগ্রগতি করেনি।
এটি ভারতের নবম এশিয়া কাপ জয়—একটি রেকর্ড। ভারত এই টুর্নামেন্টে তিনবার পাকিস্তানকে পরাজিত করেছে—গ্রুপ পর্বে, সুপার ৪-এ এবং এবার ফাইনালে।
অভিষেক শর্মাকে "প্লেয়ার অফ দ্য টুর্নামেন্ট" হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। তিলক ভার্মাকে "প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ" হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
এই প্রতিযোগিতাটি কেবল খেলা নিয়ে ছিল না—এটির সঙ্গে জড়িত ছিল রাজনীতি, সম্মান এবং জাতীয় অনুভূতি।

0 মন্তব্যসমূহ